Header Ads

Header ADS

পচার ইচ্ছা

 

পচার ইচ্ছা

নদীর গহীন চর।বর্ষাকালে যেমন সম্পূর্ন নদী পানি তে থৈ থৈ করে, তেমনি শরৎ ও হেমন্তকালে পাঠের পর মাঠ পরে থাকে।এর বেশি জায়গাই থাকে বালুতে পূর্ন।তবে কিছু কিছু জায়গায় পলি পরে চাষাবাদের যোগ্যও হয়।সেগুলো তে চাষ করে না পানির অভাবে।কারণ এখন কার মতো তো তখন স্যালো মেশিন ছিল না। একবার পানির অভাব পরড়ে সেই ফসল নষ্ট হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।সেজন্য লোক জন নদীর কাছাকাছি শুধু চাষাবাদ করতো।আর বাকি জায়গা গুলো পরে ছিলো। সেখানে প্রচুর ঘাস হতো।আর এর জন্যই মানুষ অধিক পরিমানে গরু পালন করত।

নদীর পুরাতন চরে গোটা কয়েক ‍বাড়ি নিয়ে গড়ে উঠেছে গ্রাম।অন্য সবার মতো তাদের বেশি গরু না থাকলেও এক এক জনের চার পাঁচ টা করে ছিল।সেই গ্রামের দুটি ছেলে পচা ও মধু।

গ্রামের উত্তরের দিকে ছিল পচার বাড়ি আর মাঝ খানে মধুর।দুই জনের বাড়ি সামান্য দূরত্বে অবস্থান হলেও তাদের মাঝে ছিল ঘনিষ্ট বন্ধুত্বের বন্ধন।একে অন্যকে ছাড়া এক দন্ডও থাকতে পারত না।পচা নাম টা খারাপ শোনালেও, সে কখরো খারাগ কাজ করত না।অন্য দিকে মধু ছিল সকল খারাপ কাজের উসতাদ। মারামারি সহ সকল কাজের অভিযোগ ছিল তার নামে।

গ্রাম থেকে স্কুল দূরে হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা টা তাদের হয়নি। কিন্তু বাবা মায়ের কাছে ঠিকি হিসাব শিখেছে।যদি তারা স্কুলে যেত, তাহলে তারা তখন চতুর্থ পঞ্চম শ্রেনিতে পড়ত।এরকম বয়স হয়েছে তাদের।স্কলে না যাওয়াতে অন্য সবার মতো তারাও মাঠে গরু চড়াতে যেত।সারা দিন গরু চড়িয়ে বিকালের জন্য অপেক্ষা করত।কারণ তারা প্রতি দিন বিকালে দুধ নিয়ে বাজারে যেত।আর বাজারে গেলেই তো বিস্কুট সিঙ্গারা খাওয়া হতো।

বাড়ি থেকে বাজার বেশ বেশ দূরেই ছিল। ঘন্টা খানেক সময় লাগত।বাজারে যেতে একটা নদী পার হতে হতো। সে সময় তেমন পানি থাকে না। কখনো হাটু আবার কখনো একটু বেশি হতো।নদী পার হলেই বড় সড়ক। দুই পাশে বড় বড় গাছ আর ঘর বাড়িতে পূর্ণ। মাঝে মাঝে ছোট ছোট দোকান-পাটও ছিল।বড় সড়ক টি সোজা গিয়ে বাজার টা দুধ হাটি টে পৌছেছে।সেখানে মিলিত হয়েছে চার টা বড় সড়কের। তার মদ্ধে দুই টা সড়ক পাড়ি জমিয়েছে শহরের দিকে।

অন্য দিনের মতো সেদিনও তারা বিকালে দুধ নিয়ে বাজার যাচ্ছিল। নদীতে গিয়ে মধু অন্য সব দিনের মতো দুধে পানি মিশিয়ে নিল।সে পচাকে আগেও অনেক বার এ কাজ কারতে বলেছে।তবে পচা কোনো দিন করেনি।সেদিন সে মনে মনে ইচ্ছা করল, মধুর মতো সেও দুধে পানি মিশিয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আরো বেশি বিস্কুট খাবে।যেমনি ভাবনা তেমনি কাজ।মধু পচার কাজ দেখে বলল”আজ দেখবি দুই জনে অনেক বিস্কুট খাবো।তার পর তারা দুই জনে হাঁতে লাগল বাজারে উদেশ্যে।

সেদিন তারা একটু তারারারি বাজারে গিয়ে পৌছায়।তবে তেমন কোনো ক্রেতা ছিল না।কিছু ক্ষন পর এক জন লোকের সাথে আরও তিন জন লোক আসে। আর তাদের হাতের  মধ্যে কি যেন ছোট একটা বক্সের মতো ছিল।ওরা ওচা কে চিনতে পারছিল না। কারণ আগে ঐ টা কখনো তারা দেখেনি।লোক টা সেই বক্স টা কে একে একে ‍সবার দুধের পাত্রের মধ্যে ফেলতে লাগলেন।এর মধ্যে দুই জনের মাথায় কেন জানি তাদের দুধ তাদের মাথাতে ঢেলে দিছে।পচা পাশের জনার কাছে বক্স টার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ঐটা হচ্ছে দুধে পানি আছে কিনা তা মাপার মেশিন।এটা শোনে পচার মনের মধ্যে ধুক ধুক শুরু হয়ে গেল।সে মধুকে এ কথা বলাতে মধুরও একটু দুশচিন্তা শুরু হলো।

অন্য সবার গুলা পরিক্ষা করে যখন তারা মধুর দুধ পরিক্ষা করলেন, তার মধ্যে পানি পেলেন।মধুর দুধের পাত্র হাতে নিবে,তখনি মধু কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলে উঠল”স্যার আামাদের বাড়ি নদী ঐপাড়ে। পানি পাড় হয়ে আসতে হয়।আজ নদীতে একটু পানি বেশি হয়েছে। কাপড় ধরতে কখন যে পানি উঠেছে,আমরা জানি না স্যার।আমাদের দুধ ফেলে দিলে আমাদের কে আজ না খেয়ে থাকতে হবে।”

মধুর কথা শোনে লোকটি পচা ও মধুকে দুধের অর্ধেকৈ টাকা দিয়ে দিলেন। আর বললেন ”সব সময় দেখে শোনে দুধ নিয়ে আসবা। আর একদিন যদি এই রকম দেখি সেদিন তোমাদের কঠিন শাস্তি দিব।”

টাকা নিয়ে তারা সোজা বাড়ির দিকে রওয়ানা দিল।সেদিন আর কোনো প্রকার বিস্কুট খাওয়া হলো না। তারা একে অপর কে বলল কেউ আর কোনো দিন দুধে পানি মিশাবে না।


কোন মন্তব্য নেই

graphixel থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.