Header Ads

Header ADS

শালি যখন প্রেমিকা পার্ট ২

 

সেদিনের হ্যাঁ বলার পর থেকে আমাদের মধ্যে প্রচুর যোগাযোগ শুরু হয়। তবে, তখন আমাদের কারো কাছে ফোন ছিলো না। আমরা কাগজে লেখে মনের ভাব প্রকাশ করতাম। যাকে সাধারন ভাবে বলা যায় চিঠি। প্রথম দিকে আমার কোনো আগ্রহ ‍ছিলো না। ওর সাথে কথা বলতে বলতে আমি বদলে যাই। আমার মাঝে পরিবর্তন লক্ষ করলাম। কেন জানি তাকে দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকতাম । কখন আসবে চিঠি কখনই বা তার সাথে কথা বলব। আমাদের স্কুলে তেমন কথা হতো না। যা কিছু ছিল কোচিং এ।

স্কুল ছুটি দিলে আমরা কোচিং এর জন্য বসে থাকতাম। আমরা মানে আমার বন্ধু আরকি। অন্য দিকে রিয়া বাসায় যেত। আর তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে কখন যে ক্লাস শুরু হতে বুঝতামৈই না আমাদের সবচেয়ে মজার সময় ছিল যখন টিফিন দিত। অন্য সব কোচিং এর কথা বলতে পারব না । তবে আমাদের কোচিং এর নিয়ম ‍ছিল আলাদা তাই হয় তো টিফিন দিত।যাই হোক, ক্লাস রুমে তো আর কথা বলতে পারতাম না। কিন্তু ইশারায় বলার থেকে বেশি কিছু হয়ে যেত। যেটা শুধু তারাই বোঝে যারা প্রেমে পরে।তার পরেও কথা বলার জন্য আমরা টিফিন টাইম বেছে নিয়েছিলাম।

তখন শীতকাল, কোচিং এ টিফিন দিয়েছে।প্রতিদিনের মতো আমরা সবাই ঘুরতে বেড় হয়েছি। হঠাৎ সিদ্ধান্ত হলো পিঠা খাওয়ার । এ আবার যেন তেন পিঠা না, ভাপা পিঠা । যখন ওরা বলতেছিল আজ পিঠা খাবে তখনই আমি ভাবছি আজ টাকা টা আমাকেই দিতে হবে। আমার ভাবনা শেষ হতে না হতেই ঔ দিক থেকে নাঈম বলে উঠল

নাঈম : আজ সব বিল তোর ।

আমি : কেন ?

তানভির : কেন আবার,নতুন ভাবি বানাইছস আমাদের খাওয়া দিছস?

জেসমিন : ঠিক  তো আমাদের খাওয়া আজ দিবি।

আমি : আচ্ছা ছল । পিঠাই খাবি তো চল।

রিয়া কিছুই বলতেছিল না। শুধু নিরবে হাসতেছিল। কাছাকাছি একটা পিঠার দোকান ছিল । প্রতিদিন সেখানে পিঠা বানাতো। আমরা গিয়ে বসলাস । যদিও দোকান টা ছোট ছেল, তবুও বসার ব্যবস্থা ছিল। আমাদের জন্য পিঠা নিয়ে আসল। আমরা বেশ চার পাঁচ জন ছিল্ম মেখানে। তার মধ্যে রিয়া ছোট ছোট করে বল্লো।” দুলাভাই কে কি খাইয়ে দিব ? না ‍তুমি খাবা?” আমি অনেক টা ইতস্ত বোধ করলাম। বললাম এখানে ? লোকে কি বললে? রিয়া বলল” লোকে যাই বলুক  তুমি হা করো।” জোর করে রিয়া খাইয়ে দিল। আমিও আর না করলাম না। নিশাত আবার অন্য দিক থেকে বলতেছিল।”এবার মনে হচ্ছে প্রেম টা করতেই হবে।অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।” নিশাতের কথা শেষ না হতেই অনুপমার প্রতিবাদ। ”তুই করবি আবার প্রেম? (বলতেছে আর হাসতেছে) ।” নিশাতও কম কিসে অনুপমাকে টক্ক দিয়ে বলে ”হাসছিস কেন? এমনও হটে পারে তুই আমার পিছে ঘুরবি আর আমি পাত্তাও দিব না।” ”আমি ঘুরবো তোর পিছনে? সে সুন্দর দিন টা কোনো দিনও আসবে না।” শেষ মেষ আমি ওদের থামিয়ে বল্লাম খাওয়া শেষ চল যাই।

এর পর অনেক দিন কেটে গেল। আর এর মধ্যে আমার একটা ফোন হয়েগেল। রিয়ও ফোন নিতে চায়ছিল।কিন্তু ওর বাসা থেকে নিতে দেয়নি। ভাবছিলাম আমি একটা ফোন গিফ্ট করব। কিন্তু রিয়া কে বলাতে সে নিতে রাজিই হয়নি।বলে যে বাসায় যদি একবার জানতে পারে আমার কাছে ফোন আছে। তাহলে অনেক বড় সমস্যা হবে।দুই জনে মিলে একটা সিদ্ধা্ন্তে আসলাম। রিয়ার মায়ের তখন ফোন ছিল। সেই যে শুরু হলো কথা বলা, যা বলে শেষ করা যাবে না। তবে , আমাদের ‍কিছু নিয়ম ‍ছিল।নিয়ম টা হচ্ছে এই রকম, রিয়া এসএমএস দিলেই আমি এসএমএস বা কল ‍দিতে পারব। কারণ, টা অনুমান করাই যায়।তো এবাবে চলছিল দিন সপ্তাহ মাস বছর।

এর পর আমাদের ফাইনাল পরিক্ষা হওয়ার কারণে আমরা আর স্কুল কোচিং কোতাও দেখা হযনি।হঠাৎ কয়েক দিন থেকে রিয়ার এসএ্মএস পাচ্ছিলাম না।কল দিয়ে দেখি ফোনও বন্ধ। ভাবলাম ওর বাসায় যাব।কিন্তু গিয়ে কি বলব। এই প্রশ্ন টা বার বার কাটা দিচ্ছিল মনের ‍ভিতর।ওর কয়েক টা বন্ধু দেরও বলেছিলাম এই ব্যপারে। কিন্তু ওরাও বলতে পারে না।তাই সাহস করে রিয়ার বাসার সামনে চলে গেলাম। কোলিং বেল দিয়ে ভাবতেছিলাম হয়ত রিয়া বেড় হবে।তার বিপরীত হলো। রিয়ার পরিবর্তে তার মা বেড় হলেন।

আমি সালাম দিলাম। সালামের জবাব দিয়ে বলল, ”তুমি শিহাব না?” ”জি  আন্টি আমি শিহাব।””কেমন আছো? ভেতরে আসো।” আন্টি মৃদু স্বরে বল্লেন । আমি ভেতরে ডুকতে ডুকতে বল্লাম ”আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি। রিয়া কোথায় আন্টি?”  আমার বলা শেষ না হতেই তিনি বল্লেন ”রিয়া বাসাতেই আছে বলেই রিয়া কে ডাকতে শুরু করলেন।” রিয়া এসে তো অবাক, আমি তাও  আবার রিয়ার বাসায়। এটা যেন কল্পনার বাইরের বিষয় ছিল। তাকে দেখে এমন টা মনে হচ্ছিল । কিছু ক্ষণ পর সে বল্লো। ”তুমি?  কেমন আছো ? ”ভালো ”।  আন্টি তখন বল্লেন ”আচ্ছা তোমরা কথা বলো। আমি চা নিয়ে আসছি”। আমি বল্লাম লাগবে না। কিন্তু প্রথম বার এসেছি তাদের বাসায়, না খাওয়ালে কেমন হবে। তাই তিনি একটু জোর করেই গেলেন।

তার পর আমি রিয়া কে বল্লাম , ”তুমার ফোন বন্ধ কেন? আর দেখাওি করতেছ না ।” উত্তরে সে বল্লো তার ফোনের সমস্যা হয়েছে, আর একটু অসুস্থ বেশি কিছু না।

”আচ্ছা আজ আসি , বেশি দেরি করা যাবে না।বাসায় কাজ আছে।” ”হাঁ তোমার কি কাজ আছে আমি জানি, সারা দিন শুধু আড্ডা দেওয়া।”

 আর আন্টি কিছু জানতে চাইলে বলবা একটা কোর্স  করার কথা জানানোর জন্য আসছিলাম । কথা শেষ না হতেই রিয়া বলে উঠল ”সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না। কি বলতে হবে আমি সেটা জানি। প্রেম করলে সাহস রাখা লাগে বোস..।” এর মদ্ধেই আন্টি চলে আসলেন । তাই চা না খেয়ে আসতে পারলাম না। সবাই মিলে বেশ আনন্দো করে করে চা খেলাম। আমাদের মদ্ধে ভালই কথা বার্তা হচ্ছিল । কিছু সময় কাটিয়ে, আসার সময় আন্টি কে সালাম দিয়ে চলে আসি ।

তার পর বেশ ভালোই দিন কাটতেছিল। রিয়ার সাথেও কথা চলতো। তবে রিয়ার সাথে সমস্যা না হলেও রিয়াকে নিয়ে সমস্যা হতো।তেমন কিছু না পোলাপাইন কে একটু শায়েস্তা করা লাগতো আর কি । কারণ রিলেশন করলে নাকি মাইয়ার বাবার চেয়ে বয় ফ্রেন্ডের চিন্তা বেশি থাকে ।কোথায় যায়  কখন ‍কি করে ।  প্র্ত্যেক টা সময় জানা থাকে।আর তখন যদি কেউ তাকে খারাপ চোখে দেখে তাহলে তো কথাই না। শুরু হতো একশন। মানে রিয়া কে কেউ দিসটার্ব করলে তাকে উচিত শিক্ষা দিয়ে ‍দিতাম।

এগুলা ছাড়াও মাঝে মাঝে ‍রিয়ার সাখেও ঝামেলা হতো, কথা বলা নিয়ে। সময় মতো রিপ্লে পেতাম না্। তাই নিয়ে কথা কাটাকাটি হতো।

একবার যা হলো তা বিশ্বাস করার মতো না।এক দিন কল দিয়েছিলাম । কিন্তু ফোন বন্ধ পেলাম। তার কিছু ক্ষণ পর কল দিয়ে দেখলাম ওয়েটিং দেখাচ্ছে । এর আগেও অনেক বার এই রকম হয়েছিল । আমি কিছু বলিনি। তবে এবার আমার অনেক টাই খারাপ লেগেছিল। তাই আমি রিয়া কে একটু পরিক্ষা করতে চাইলাম। তার পরের দিন আবার ‍রিয়া কে কল দিলাম। রিঢা কর ধরল ভালোই কথা হরো। কথার মাঝখানে তাকে সন্দেহ ছাড়া বলা্লাম, তুমি অনন্য জন কে পছন্দ কর সেটা কেন আমারে বল্লা না? আমার কথা শুনে রিয়া অবাক হয়ে গেল। ভঅবতেছেন আমি এভাবে বলার কারণে অবাক হয়েছে ? না। আমি বিষয় টা কি ভঅবে জানরাম এটা ভেবেই অবাক।

আমি কথা বলতেছি রিয়ার কোনো শব্দ পাচ্ছি না। অনেক ক্ষণ পলে বল্লো “আসলে আমি বুঝতে পারছিলম না তোমাকে কিভাবে কথা টা বলব।”

ওর এই কথা শুনে আমার অনেক রাগ হয়। রিয়া কে অনেক গালাগালি করি। শেষ মেষ কল কেটে দেই্। বুঝতে পারছিলাম না তার পর কি করা উচিত। বাসাতেও রাগ অভিমানে ভালো ব্যাবহার করি নি । তবে কাউ কে বুঝতেও দেইনি আমার ঘটনা। আমার অনেক বন্ধু বুঝাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমার মাথায় কোনো কিছুই ডুকতেছিল না। তারপর নিজে রিজেকেই শান্তনা দেই। মানিয়ে নেই নিজে কে।

কিছু দিন পর আমি রিয়াকে আবার কর দেই। তাকে দেখা করতে বলি। কিন্তু সে আসেনি। জানি না কেন্ ।হয়তো ভয়ে অথবা লজ্জায়। একদিন বিকেলে তাকে আবার কল দিই। রিয়া আমার কল রিসিপ করতো কখনো কেটে দিত না। তবে সে কোনো কথা বলতো না।শুধু  কর রিসিভ করে একটাই শব্দ বলতো হ্যালো ,

সেদিন বেশি কিছু বলিনি শুধু বরেছিলাম”তোমাকে আমি ভালোবেসেছিলাম আপন করে পাবো বলে। কিন্তু সেটা হয়তো আর হবে না।জোর করেও আমি তোমায় পেতে চাই না।আগে ভালোবাসতাম কাছাকাছি রাখার জন্য যাতে প্রতিটা ক্ষন তোমায় দেখতে পারি। আর এখন থেকে ভালোবাসবো দূরে রাখার জন্য। যাতে তোমার প্রতি ভালোবাসা শেষ না হয়। যেখানে থাকো ভালো থেকো। আর একটা কথা যদি কাউকে ভালোবাসো তাহরে মন থেখ বেসো। এই বরে ফোন কেটে দেই।

রিয়ার সাথে আর কোনো দিন কথা বা দেখা হয়নি। তবে ওর ফ্রেন্ডদের সাথে কথা হতো। মাঝে মাঝে দেখাও হতো । কথার মাঝে ওর কথা উঠত। সেখান থেকে জানতে পারি রিযার আবার ব্রেকাপ হয়েছে।

যাই হোক এখনো আমি চাইব সে ভালো থাকুক সুখে থাকুক।

আমি আজও বুঝতে পারিনি , আমার প্রতি রিয়ার শুরু টা ভারো লাগা ছিল, না ভালোবাসা?

 


কোন মন্তব্য নেই

graphixel থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.